.
সম্পর্ক
– অমরেশ কুমার
অস্থির মন কখনো সুস্থির জীবনের অধিকারী হয় না, সুস্থির জীবন কখনো সম্পর্কের বাঁধন ভাঙ্গে না । সম্পর্কের বন্ধন একটি কাল্পনিক মায়ার জাল । এই জাল কেউবা বুনতে পারে, কেউবা ছিঁড়তে পারে । আবার, কেউ ছেঁড়া জাল দিয়ে নতুন সম্পর্ক গড়তে পারে । অন্যভাবে বলা যায় সম্পর্ক অনেকটা মাঝির মতো, উত্তাল সমুদ্রের পাশ কাটিয়ে হাল ঠিক রাখলে নৌকার মতো সম্পর্ক সোজা পথে এগোয় । আর, সামান্য ভুলে মাঝ সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার মতো কত শত সম্পর্ক চোখের জলে ভেসে যায় ।
সুতরাং সম্পর্কের মধ্যে চলে ভাঙ্গা গড়ার খেলা । তাই খেলায় হার-জিত দুটোই বর্তমান । জয় লাভের মাধ্যমে সম্পর্কে আনন্দ অনুভব হয় , আর পরাজয়ে মনের মধ্যে উত্তাল ঢেউয়ের তরঙ্গ বয় ।
সম্পর্কের এই অনিশ্চয়তা শুধুমাত্র যে দাম্পত্য জীবনে অসুবিধা সৃষ্টি করে তা নয় । পরিবার এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি সবকিছু প্রতিকূলে থাকে । সূক্ষ সুতোতে অদৃশ্যভাবে সম্পর্ক জুড়ে থাকে । সুতোর টানের অনুভূতির উপর নির্ভর করে সম্পর্কের গাঢ়ত্ব ।।
তাই , এই “সম্পর্ক” সম্পর্কে বোধগম্য হওয়া খুব মুশকিল , সম্পর্ক শুধুমাত্র পিতামাতার কিংবা পারিপার্শ্বিক আকর্ষণ নয় কিংবা জিনেটিক এর প্রতিফলিত রূপ নয় । কেননা, সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি মানুষকে একটি সম্পর্ক নতুন বাঁধনে বেঁধে ফেলতে পারে। এই সম্পর্কেই আমরা কখনো হয়ে উঠি বন্ধু, স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা, ভাই-বোন বা বিভিন্ন আত্মীয়। জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পর্কগুলোও হয়ে ওঠে ভিন্ন। কখনো কাছের মানুষ দূরে চলে যায় আবার কখনও সম্পূর্ণ অচেনা মানুষ হয়ে ওঠে কাছের।
সম্পর্ক এই ফুলের ন্যায় আচরণ, যা শুকিয়ে গেলে নষ্ট হয়, যা ছিঁড়ে গেলেও নষ্ট হয় । আবার ধুলো লাগলে কিংবা মলিন হলেও আমরা তা উপলব্ধি করি, যাকে ছোঁয়া বা স্পর্শ করা যায় না কিন্তু নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।